১০৩ বছর বয়সেও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন
ড. মনি কুমার ছেত্রী
১০৩ বছরে পড়লেন বিশিষ্ট চিকিৎসক মণি কুমার ছেত্রী। তিনি একশ তিন বছরের তরুণ। এই বয়সেও রোজ নিয়ম করে ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠেন। ব্রেকফাস্ট সেরেই গলায় স্টোথো ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়েন ডাক্তারবাবু। দিনভর নিজেকে ব্যস্ত রাখেন মানুষকে সুস্থ রাখার কাজে।
তিনি মাস্টার অফ মাস্টার্স, টিচার অফ টিচার্স।’
এই মহান মানুষটির জন্য আপনাদের গর্ব করা উচিৎ।
১৯২০ সালের ২৩ মে দার্জিলিঙে জন্মগ্রহণ করেন মণি কুমার। প্রাথমিক শিক্ষা দার্জিলিং মিউনিসিপ্যালিটি প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৪৪ সালে ডাক্তারিতে স্নাতক। ১৯৪৯-এ ডাক্তারিতে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। এরপর আরও পড়াশোনার জন্য যান বিদেশেও। ১৯৫৫ সালে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯-এ আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি থেকে ফেলোশিপ করেন। ১৯৭২ সালে ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস থেকে ফেলোশিপ করেন। ১৯৭৩ সালে রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিসিয়ানস থেকে ফেলোশিপ করেন।
লন্ডন থেকে ফিরে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে শুরু মণি কুমারের কর্মজীবন। যোগ দেন রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান হিসেবে। পরবর্তীকালে কনসালট্যান্ট ফিজিশিয়ান হিসেবে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পিজি হাসপাতালে (এসএসকেএম )। এই হাসপাতালে দীর্ঘদিন সার্জেন সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন মণি কুমার। সামলেছেন আইপিজিএমইআর কার্ডিওলজি এবং মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর ডিরেক্টরের দায়িত্বও। বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি এবং আইপিজিএমইআরের ডিরেক্টরও ছিলেন তিনি। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তারও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালে তৈরি হয় ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিট তথা আইটিইউ সেটআপ। এনডোক্রিনোলজি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, ডায়াবিটিস, রিউম্যাটোলজির মতো আলাদা আলাদা বিভাগ চালু হয়। যা রাজ্যের কোনও হাসপাতালে প্রথম। আজও এসএসকেএম হাসপাতালের রোনাল্ড রস বিল্ডিংয়ে মেডিসিন বিভাগে তাঁর নামে একটি কেবিন রয়েছে।
চিকিত্সা ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বহু সম্মান পেয়েছেন মণি কুমার। ১৯৭১ সালে মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তরফে ডক্টর বি সি রায় মেমোরিয়াল রিসার্চ প্রোজেক্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৭৪ সালে পান পদ্মশ্রী সম্মান। শুধু অভিজ্ঞ চিকিত্সক কিংবা দক্ষ প্রশাসকই নন, তিনি একজন ছাত্র দরদীও।
তিনি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ব্যক্তিগত চিকিত্সক।
প্রতিবছর ২৩ মে ঘটা করে তাঁর জন্মদিন পালন করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর ছাত্ররা। এই মহান ডাক্তারের মতো প্রতি এলাকায় একটি করে থাকেন তাহলে সমাজ পাল্টে যাবে।
মহান মানুষটির জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাই।🙏🌹🙏🌹🙏🌹🙏
(সংগৃহীত)
Comments
Post a Comment