কৃষ্ণ দাস পাল Krishna Das pal
#কৃষ্ণদাস_পাল
ব্যাবসা বিমুখবাঙালীর বদনাম ঘুচিয়ে আপনার '#বিস্কফার্ম' বেকারী ব্যবসায় ভারতে স্থান এখন চতুর্থ, আর প্রথমস্থান দখল করাই লক্ষ্য। সফল হোক আপনার আরাধনা।
উত্তর কলকাতায় শ্যামপুকুর স্ট্রীটের ছোট্ট এক চিলতে ঘরে মা, বাবা, ভাই বোনদের সংসারে টিনের চালের রান্না ঘরে পড়াশুনা করে সাফল্যের শিখরে পৌঁছানোর এ এক অনন্য কাহিনী।
বড়বাজারের এক মামুলি ডিস্ট্রিবিউটর কে ডি পালের সারা দেশ জুড়ে বিস্ক ফার্ম সাম্রাজ্য গড়ে তোলার এ এক অনন্য ইতিহাস। পাশাপাশি নিজের গ্রামে সমস্ত রাস্তা কংক্রীটে ঢালাই করিয়ে, তাতে বাতিস্তম্ভ লাগিয়ে বিদ্যূতের যাবতীয় খরচ বহনের এক অনন্য মানসিকতা। গ্রামের কোনও ছেলে বা মেয়ে প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করলেই তার সারা জীবনের লেখাপড়ার খরচ বহনের কবুল করা, কি সেই মন্ত্র যার জোরে এক জীবন যাত্রা এমন দুর্লভ নজির গড়ে তূলতে পারে?
কে ডি পাল বলেই সকলে চেনে তাঁকে। কিন্তু নাম তাঁর কৃষ্ণদাস পাল। ১৯৪০ সালে বর্ধমান জেলার কামারকিতা গ্রামে তাঁর জন্ম। বাবার নাম পূর্ণ চন্দ্র পাল, জননী অপর্ণা। পাঁচ ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। কামারিতার প্রাথমিক বিদ্যালয়েই তাঁর বিদ্যারম্ভ। বাবা বিয়ের আংটি বিক্রী করে কলকাতায় এসেছিলেন ভাগ্যান্বেষণে। শহরে পৌঁছে গঙ্গায় ডুব দিয়ে প্রার্থনা করেন,'যাই করি তাতেই যেন সেরা হতে পারি।' শুরুতে অল্প মাইনের একটা চাকরী পেয়েছিলেন কলকাতার এক বেসরকারী অফিসে। তারপর সেটা ছেড়ে বড়বাজারের একটা ছোট্ট ঘর থেকে শুরু হল পূর্ণচন্দ্রের ট্রেডিং ও ডিস্ট্রিবিউশনের কাজ। স্বাধীন ব্যবসা কিন্তু অতি সামান্য । পরিবারের সকলকে নিয়ে এসে তুল্লেন শ্যামপুকুরের এক ঘরের এক আস্তানায়। কৃষ্ণদাস ভর্তি হলেন কাছেই শ্যামবাজার এ. ভি স্কুলে। পড়াশুনার জায়গার অভাব, তাই তিনি পড়াশুনা করতেন টিনেরান্নাঘরে।
অল্প বয়স থেকে ব্যাবসার কাজে বাবাকে সাহায্য করতেন কৃষ্ণদাস। প্রথমে সাইকেল ভ্যানে এ্যালপাইন দুধ পৌঁছে দিতেন বাড়ি বাড়ি। আরও বড় হলে মোটর ভ্যানে বড় বড় দোকানে নানান ধরনের মাল পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এদিকে আবার সেল্স ট্যাক্স রেজিস্টার লেখার দায়িত্বও ছিল তাঁর উপর। পড়াশুনাতে ও ভালো বলে নাম হয়েছে স্কুলে। তাই ছোট ভাই বোনেদের লেখাপড়ায় সাহায্য করার দায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁধে। এই করতে করতেই এ. ভি স্কুল ছাড়িয়ে ইংরাজী অনার্স পড়তে ঢুকলেন সিটি কলেজে। পরপর দু বছর কলেজ ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন P.S.U র সমর্থনে। বি.এর পর এম.এ ও আইন পড়া শুরু হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু এম.এ পরীক্ষার পর পূর্ণচন্দ্র আর অপেক্ষা না করে ছেলের বিয়ে দিয়ে দিলেন অজিত পাঁজার এক আত্মীয় কন্যা মঞ্জুশ্রীর সঙ্গে। তাঁর ব্যবসার অবস্থা ততদিনে বেশ পোক্ত হয়ে উঠেছে। শ্যামপুকুর স্ট্রীটেই দেড় কাঠা জমির উপর ছোট্ট একটা বাড়ি করেছেন। তবু বাবার উপর চাপ না বাড়িয়ে কৃষ্ণদাস চাকরী নিলেন হাওড়ার অক্ষয় শিক্ষায়তন স্কুলে। ইতিমধ্যে এম.এ ও আইন দুটি পরীক্ষারই রেজাল্ট বেড়িয়েছে। দুটোতেই কৃতকার্য। মন চাইল ওকালতি করতে । তাই কিছুদিন হাইকোর্টে ওকালতীও করেন। ততদিনে পূর্ণচন্দ্রের ব্যবসা আরও বড় হয়েছে। তিনি ছেলেকে পুরোপুরি টেনে নিলেন ব্যবসার কাজে।
১৯৭৩ সালে পূর্ণচন্দ্র তাঁর সমস্ত ব্যবসা ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দিলেন। '৭৪ সালে ছেলেরা সব লেগে পড়লেন যে যার নিজের ব্যবসায়। কৃষ্ণদাস পেয়েছিলেন ডিস্ট্রিবিউশন। তিনটে মোটে কোম্পানী। নেসলে, ল্যাকমে আর ক্যালকাটা কেমিক্যালস। মাসে ব্যবসা হয় তিন লাখ টাকার মত। লাভ মাসে হাজার তিনেক টাকার মত। তাতেই চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু কে ডি লেগে পড়লেন ব্যবসা বাড়াতে। ডিস্ট্রিবিউশন নিলেন ব্রিটানিয়া, ডাবুর, হরলিক্স, প্রভৃতি কোম্পানীর। ব্যবসা হু হু করে বাড়তে লাগল।
এর মধ্যে ক্যালকাটা কেমিক্যালসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সমরেশচন্দ্র দাশগুপ্ত মারা গেলেন। তাঁর স্ত্রী লেখা দাশগুপ্ত কে ডিকে বল্লেন তিনি যদি ক্যালক্যাটা কেমিক্যালসের বেশীর ভাগ শেয়ার কিনে নেন তাহলে তাঁরা দুজনে মিলে কোম্পানী চালাবেন। তাঁর কথায় ভুলে কৃষ্ণদাস ২৮% শেয়ার কিনে নিলেন। ইতিমধ্যে রেখাদেবী শ ওয়ালেসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। কে ডিকে বল্লেন তাঁর বেশির ভাগ শেয়ার শাহ ওয়ালেসের শ্রী এস. পি আচার্যকে বেচে দিতে। কে ডি রাজী হলেননা। শুরু হল আইনী লড়াই। রেখাদেবী কে. ডির ক্যালক্যাটা কেমিক্যালসের ডিস্ট্রিবিউটর শিপ কেড়ে নিলেন। এইসময় পশ্চিম বঙ্গের তখনকার মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এগিয়ে এলেন। জ্যোতি বাবুর বিচক্ষণতা ও সৌজন্যে মুগ্ধ কৃষ্ণদাসের কথা অনুযায়ী জ্যোতি বসু রেখা দেবীকে বাধ্য করলেন কে ডির ডিস্ট্রিবিউটর শীপ ফিরিয়ে দিতে।
এরপর রেখা দেবী ধরলেন জার্মান কোম্পানী হেঙ্কেলকে। বিস্তর আলাপ আলোচনার পর হেঙ্কেল তাঁর ২৮% শেয়ারের জন্য ৭ কোটী টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেন। কৃষ্ণদাস রাজী হলেন। কিন্তু ঐ টাকা তিনি পুরানো ব্যবসায় ঢালতে চাইলেন না। অনেক ভেবে ঐ টাকা দিয়েই তিনি ২০০০ সালে তিনি তৈরী করলেন 'বিস্ক ফার্ম বিস্কুট' তৈরীর কোম্পানী "সাজ ফুড প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড"। তার তিন ছেলে মেয়ে শর্মিষ্ঠা, অর্পণ, আর জয়িতার নামের আদ্যক্ষর দিয়ে রাখা হল এই নতুন কোম্পানীর নাম।
প্রথম ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে কোম্পানীর হাল ধরলেন কৃষ্ণদাসের বড় জামাই বিজয় সিং। ব্রিট্যানিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট (টেকনীক্যাল) পদ থেকে সদ্য অবসর নিয়েছেন শ্রী অরূপ গুহ। তাঁকেও যুক্ত করা হল বিস্ক ফার্মের সঙ্গে। প্রথমেই ঠিক হয়েছিল বিস্ক ফার্ম যে সব জিনিস তৈরী করবে সে গুলি হবে বাজার থেকে আলাদা। প্রথম কারখানা হল উলূবেড়িয়ার 'ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ পার্ক' এ। এরপর শিলিগুড়ির 'জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির' ফুডপার্কে ৮ একর জমির ওপর তৈরী হল আরও দুটি ইউনিট। ২০০৯ সাল থেকে 'জাস্ট বেকড' নামে খুচরো দোকানও চালু হল। বর্তমানে ৩৮ টি জাস্ট বেকড চালু আছে। লক্ষ্য হল এটাকে ১০০ তে নিয়ে যাওয়া।
সমস্ত ব্যবসাকে নিয়ে আসা হয়েছে কে ডির মা অপর্ণার নামের ছাতার তলায়। দুটো অংশ ট্রেডিং আর ম্যানূফ্যাকচারিং। এর মধ্যে ট্রৈডিং থেকে ব্যবসা হয় বছরে ৭০০ কোটি টাকা। আর ম্যানুফ্যাকচারিং অর্থাৎ বিস্ক ফার্মের বিস্কুট, কুকিজ, কেক, ওয়েফার প্রভৃতি ফুড প্রোডাক্ট ব্যবসা দেয় বছরে ১০০০ কোটি টাকার উপর।
এ ছাড়া শিলিগুড়িতে একটা প্যাকেজিং ইউনিট খোলা হয়েছে যার বাৎসরিক ব্যবসা বর্তমানে বছরে ৫০ কোটি টাকার উপর।
বেকারী ব্যবসায় বিস্ক ফার্মের স্থান এখন চতুর্থ। প্রথম স্থান দখল করাই কৃষ্ণদাসের লক্ষ্য। তবে একটা কথা ব্রিট্যানিয়া, পার্শে যেমন দেশের সব জায়গায় পাওয়া যায়, বিস্ক ফার্ম পাওয়া যায় না। যাতে ভারতের সর্বত্র পাওয়া যায় সেই লক্ষ্যে নাগপুরে একটা কারখানা খোলা হয়েছে।
পরের লক্ষ্য বেঙ্গালুরু। সেখানে কনকপুরায় ৮ একর জমি কেনা হয়েছে। শীঘ্রই কারখানা তৈরী শুরু হবে। এই কারখানায় উৎপাদন শুরু হলেই ভারতের সর্বত্র পাওয়া যাবে বাঙ্গালীর বিস্ক ফার্ম, ব্রিট্যানিয়াকে হারিয়ে প্রথম স্থান অধিকারই যার লক্ষ্য।
Translate in English
#Krishnadas_Pal
Your '#bisquefarm' bakery business is now the fourth largest in India, and the goal is to take the first place. May your worship be successful.
This is a unique story of reaching the pinnacle of success by studying in the kitchen of tin rice in the family of mother, father and brothers and sisters in a small house on Shyampukur Street in North Kolkata.
This is a unique history of building a bisque farm empire across the country by KD Pal, a modest distributor in Barabazar. As well as having a unique mentality of bearing all the cost of electricity by paving all the roads in your village with concrete and installing lighthouses in them. Is it a mantra that any boy or girl in the village should bear the cost of his / her education for the rest of his / her life if he / she passes secondary school in the first class?
Everyone knows him as KD Pal. But his name is Krishnadas Pal. He was born in 1940 in Kamarkita village of Burdwan district. Father's name is Purna Chandra Pal, Janani Aparna. He is the third of five brothers and three sisters. He started his education in Kamarita Primary School. My father came to Calcutta to sell his wedding ring. Arriving in the city, he dived into the Ganges and prayed, 'I can be the best in whatever I do.' In the beginning he got a job in a private office in Kolkata. Then he left it and started trading and distribution of the full moon from a small house in Barabazar. Independent business but very little. He brought the whole family to a dormitory in a house in Shyampukur. Krishnadas was admitted at Shyambazar nearby. V at school. Lack of study space, so he used to study in the tinnerannaghara.
Krishnadas used to help his father in business from a young age. At first, he used to deliver alpine milk from bicycle van to house. He also delivered various kinds of goods to big shops in motor vans. Meanwhile, he was also responsible for writing the sales tax register. The school has a reputation for being good at studying. So he had the responsibility of helping his younger brothers and sisters in their education. I have to do this. After leaving V school, he entered City College to study English Honors. For two consecutive years he was elected General Secretary of the College Union in support of the P.S.U. After BA he started studying MA and Law at Calcutta University. But after the MA exam, Purnachandra did not wait any longer and gave his son in marriage to Manjushree, a cousin of Ajit Panja. The state of his business has become quite mature by that time. He has built a small house on 1.5 katha land on Shampukur Street. However, without increasing the pressure on his father, Krishnadas took a job at Akshay Shikshayatan School in Howrah. In the meantime, the results of both MA and Law examinations have been released. Succeeded in both. The mind wanted to advocate. So he also advocated in the High Court for some time. By that time, Purnachandra's business had grown even bigger. He pulled the boy completely into the business.
In 1983, Purnachandra divided all his business among the boys. In '84, the boys got involved in their own business. Krishnadas got the distribution. Three companies in total. Nestle, Lakme and Calcutta Chemicals. The business is like three lakh rupees per month. Profit is like three thousand rupees per month. That's all there is to it. But KD set out to grow the business. Distribution was taken by companies like Britannia, Dabur, Horlicks, etc. Business was booming.
Among them was Samresh Chandra Dasgupta, managing director of Calcutta Chemicals. His wife, Dasgupta, told DK that if he bought a majority stake in Calcutta Chemicals, the two would run the company together. Forgetting his words, Krishnadas bought 26% shares. Rekha has already started talks with Shaw Wallace. KDK said most of his shares in Shah Wallace's Shri S. To sell P Acharya. KD did not agree. The legal battle began. Rekha Devi K. Deer snatched the distributor ship of Calcutta Chemicals. At this time the then Chief Minister of West Bengal Jyoti Basu came forward. According to Krishnadas, fascinated by the wisdom and courtesy of Jyoti Babu, Jyoti Basu forced Rekha Devi to return the ship of KD Distributor.
Then Rekha Devi grabbed the German company Henkel. After extensive discussions, Henkel sought compensation of Rs 6 crore for his 26% stake. Krishnadas agreed. But he did not want to pour that money into the old business. With that much money, he set up a company called Biscuit Farm Biscuits, Saj Food Products Pvt. Ltd., in 2000. His three sons and daughters Sharmistha, Arpan, and Jayita are named after the new company.
Krishnadas' eldest son-in-law Vijay Singh took over the helm of the company as the first managing director. Mr. Arup Guha has just retired from the post of Vice President (Technical) of Britain. He was also associated with the Bisque firm. At first it was decided that all the things that Bisk Farm would make would be different from the market. The first factory is at the Industrial Growth Park in Uluberia. Later, two more units were set up on 8 acres of land in the food park of Jalpaiguri Development Authority in Siliguri. Since 2009, a retail store called 'Just Baked' has also been launched. At present there are 36 Just Baked. The goal is to get it to 100.
All the business has been brought under the umbrella of KD's mother Aparna. The two parts are trading and manufacturing. From trading to business is a year 600 crore. And manufacturing i.e. biscuit firm's biscuits, cookies, cakes, wafers etc. food products business gives over 1000 crore rupees per year.
Besides, a packaging unit has been opened in Siliguri with an annual turnover of over Rs 50 crore per annum.
Biscuit Farm ranks fourth in the bakery business. Krishnadas's goal is to occupy the first place. One thing to note, however, is that bisque farms are not available anywhere in the country, such as in Britain. A factory has been opened in Nagpur with the aim of making it available all over India.
The next target is Bangalore. 6 acres of land has been purchased at Kanakpura. The factory will start building soon. As soon as production starts in this factory, Bengali biscuit farms will be available all over India.
<script async src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-4954924642538230"
crossorigin="anonymous"></script>
Comments
Post a Comment