চর্যাপদ ও ইতিহাস

 প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ও চর্যা গীতি কোষ।


পৃথিবীর যেকোনো ভাষা সাহিত্যের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে আদিপর্বে সাহিত্যের কাব্য ধারা প্রাধান্য লাভ  করেছিল। প্রাচীনকালে লিপি আবিষ্কৃত হয়নি, মুদ্রনেরও ব্যবহার অজানা ছিল। ফলে সাহিত্য বস্তু প্রধানত স্মৃতি ও শ্রুতি বাহিত হয়ে বিস্তার লাভ করে। সেই কারণে সুর, লয়, তাল ও ছন্দ সমন্বিত শ্রুতিসুভগ পদ রচিত হতো স্মৃতি স্মরণের কারণে। তাই প্রাচীনকালে কাব্য ধারা প্রচলিত হয়েছিল।

   বাংলা ভাষা সাহিত্যের ইতিহাসের ক্ষেত্রেও এই কারণে কাব্য চর্চা ছিল। তাই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে বাংলা কাব্য ধারার আদি নির্দশন কোনটি। এই প্রশ্ন উঠে আসে উনিশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষা লাভের ফলে। তাই সাহিত্যের মধ্যে ইতিহাস অনুসন্ধান করা শুরু হলো।  

 পূর্বে পুথিতেই রচনার লেখ্য রূপ বিধৃত হত। তাই সংরক্ষণের অভাবে বাংলা সাহিত্যর নিদর্শন সহজ লভ্য ছিল না। ফলে ইতিহাসের উপাদান, ভাষা তত্ত্বের উদাহরণ কিংবা সাহিত্য রসাস্বাদন, যে উদ্দেশ্যেই পাঠক সাধন করতে চান না কেন আগে সাহিত্য নিদর্শনটিকে মুদ্রিত গ্রন্থ হিসেবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে ছিল। এইভাবে পুরনো পুঁথি সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়।

  বৈশিষ্ট্য:- চর্যা পদ কাব্যের অধিকাংশ ছিল ধর্ম সম্পর্কিত। বিভিন্ন প্রকাশ ভঙ্গির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। কোথাও ধর্মের দার্শনিক ভাবনা, কোথাও দেবতার ক্ষমতার কাহিনী হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। ধর্মের সাথে জীবন রসও মিশে ছিল।

 চর্যাপদের গানগুলি মূলত দেহতত্ত্বের গান । ভাবগত আলোচনার মুখ্য উপজীব্য ছিল সাধনা তত্ত্ব।


আবিষ্কারের ইতিবৃ


ত্ত:-
রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতায় বিচলিত হয়ে পাল রাজত্বের পরবর্তী সময়ে বহু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী গৌড়ভূমি সংলগ্ন দূরবর্তী অঞ্চলগুলিতে আশ্রয় নেন। এদের প্রধান আশ্রয় স্থল হয়ে উঠে নেপাল। ফলে উনিশ বিশ শতকে নেপাল থেকে বহু পুুঁথি পেয়েছেন। হজসন সর্বপ্রথম অনেকগুলি পুঁথি আবিষ্কার করেন। বেন্ডাল ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে নেপাল থেকে "সুভাষিত সংগ্রহ" নামে পুঁথি এনে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী অন্যতম। তিনি প্রাপ্ত পুঁথির নকল তৈরি করে আনেন। ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে " হাজার বছরের পুরানো বাংলা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা" নামে প্রকাশ করেন। তিনিই এই পুথিকে বাংলা ভাষার আদি নির্দশন বলে দাবি করেন। পরে প্রমাণও পাওয়া যায়।






<script async src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-4954924642538230"

     crossorigin="anonymous"></script>



Comments

Popular posts from this blog

বৃক্ষ রোপন পদ্ধতি

আসানসোল এলাকার কালী পূজা

চাকরি করা ছেলে ও মেয়ের বাবা মা