বিয়েতে মেয়েদের ব্লাউজ পরা নিষিদ্ধ ছিল যে কারণে
যে কারণে মেয়েদের বিয়েতে ব্লাউজ পরা নিষিদ্ধ ছিল। এবং কিভাবে সেই প্রথার অবলুপ্তি ঘটে।
গত শতাব্দীতেও হিন্দু মেয়েদের ব্লাউজ
পরে বিয়ের আসরে আসা বারণ ছিল।
গগন ঠাকুর তার কন্যা সুনন্দীনির বিয়ের
সময় সেলাই করা সেমিজ বা ব্লাউজ
পরানোর অনুমতি পাননি বহু চেষ্টাতেও।
ঠাকুর বাড়ি থেকেই ভাঙা হলো এই প্রাচীন প্রথা।।
হিন্দু শাস্ত্রে কোন শুভকাজে ছুঁচ বা সুতোর সেলাই করা যেকোনো কাপড় পরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। তাই হিন্দু শাস্ত্রে মেয়েদের ব্লাউজ বা সেমিজ পরা ছিল একটি অশুচিকর ব্যাপার। তাই বিবাহ নামক শুভানুষ্ঠানটিতে মেয়েদের সেমিজ বা ব্লাউজ পরা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। এই প্রথা উনিশ শতকের মাঝামাঝি অব্দি ভারতবর্ষে চলে এসেছে।মেয়েরা হয় শাড়ির কিছু অংশ পেচিয়ে নিয়ে কিংবা অন্য একটি কাপড় দিয়ে তাদের বক্ষদেশ আড়াল করে লজ্জা-নিবারণ করত।
ঠাকুর বাড়ির ছেলে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন ভালো শিল্পী এবং সমাজ পরিবর্তন করার ক্ষেত্রেও ছিলেন একজন পথপ্রদর্শক। তার শিল্পী মন সব সময় মেতে থাকত নতুন নতুন ভাবনায়।
এবার আসি তাঁর নিজের কন্যা সুনন্দিনী বিবাহ দানের ইতিহাসে। পুরোহিত থেকে আরম্ভ করে বহু শাস্ত্রীয় পণ্ডিতদের সাথে আলোচনা করেও গগন ঠাকুর তার কন্যা সুজাতার বিয়ের সময় সেলাই করা সেমিজ বা ব্লাউজ পড়ানোর অনুমতি পেলেন না। পুরোহিতরা বললেন তারাও বিবাহ দেওয়ার সময় ধুতি বা চাদর পরেন, কোনরূপ পাঞ্জাবি পরেন না কারণ সেলাই করা জিনিস অশুভ ইঙ্গিত বহন করে।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর মেয়ে সুজাতাকে বিয়ের মঞ্চে ব্লাউজ পড়িয়েই নিয়ে এলেন। বিবাহ আসরে ব্লাউজ পরা কন্যাকে দেখেই পাত্রের পিতা সেই বিবাহে আপত্তি জানালেন এবং হিন্দু পণ্ডিতরা জানালেন যে এই বিবাহ অশাস্ত্রীয়। কারণ বিবাহ আসরে কন্যা সেলাই করা বস্ত্র (ব্লাউজ) পরে রয়েছেন। পুত্রের পিতা তার ছেলের সাথে সুজাতার বিয়ে দেবেন না বলে ঠিক করলেন। ঠিক এই চরম টানাপোড়নের সময় সহাস্য গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর দাবি করলেন যে তার কন্যা সুজাতা কোন সেলাই করা কাপড়ই পরেননি এবং তিনি সবাইকে ঘোষণা করলেন যে উপস্থিত কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন সুজাতার ব্লাউজ সেলাই করা তবে তিনি তাকে এক লক্ষ টাকার পুরস্কার দেবেন।
শেষ পর্যন্ত এই এক লক্ষ টাকা কারোর পাওয়া হয়ে উঠলো না।কারণ ছেলের বাড়ির মেয়েরা পরীক্ষা করে দেখলেন যে বিয়ের আসরের কন্যার ব্লাউজ সেলাই করা হয়নি। শিল্পী গগনেন্দ্রনাথ নিজে বানিয়েছেন তার এই কন্যার ব্লাউজ বা সেমিজ। নিপুন কৌশলে দামি আঠার সাহায্যে তার বস্ত্র খন্ডটি জোড়া দিয়ে তিনি সুজাতার ব্লাউজ তৈরি করেছেন। এবার অতি আনন্দের সাথে ধুমধাম করে সুজাতার বিবাহ হল। প্রথম ব্লাউজ পরা কন্যার এই বিবাহবস্ত্রটি গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পকীর্তি হিসেবে কলেজ স্ট্রিটের মিউজিয়ামে স্থান পেল।
এরপর থেকেই বাংলার মেয়েরা সেমিজ বা ব্লাউজ পরে বিবাহের অনুমতি পেল।।
সংগৃহীত
Translate in English
That is why it was forbidden for girls to wear blouses at weddings. And how that practice became extinct.
Blouses for Hindu girls even in the last century Later it was forbidden to come to the wedding hall. Gagan Tagore married his daughter Sunandini Time sewn shirt or blouse He was not allowed to wear it even after many attempts.
This ancient custom was broken from Thakur's house.
In Hindu scriptures, it was completely forbidden to wear any cloth sewn with needles or thread for any good deed. So in Hindu scriptures it was an impure thing for girls to wear blouses or chemises. So in the auspicious ceremony called marriage, it was completely forbidden for girls to wear chemises or blouses. This custom has been in vogue in India since the middle of the nineteenth century.
Gaganendranath Tagore, the son of the Tagore family, was a good artist and also a pioneer in changing society. His artist mind was always full of new ideas.
Now let's come to the history of marrying his own daughter Sunandini. Gagan Tagore was not allowed to teach his daughter Sujata's sewing shirts or blouses during her marriage, despite discussions with many scriptural scholars, starting with the priesthood. Priests say they also wear dhoti or chador at weddings, not any Punjabi because the sewn thing carries an ominous sign.
Gaganendranath Tagore brought his daughter Sujata to the wedding stage wearing a blouse. The bridegroom's father objected to the marriage after seeing the bride wearing a blouse at the wedding, and Hindu scholars said the marriage was unscriptural. Because the bride is wearing a sewn dress (blouse) in the wedding hall.The son's father decided not to marry Sujata to his son. Gaganendranath Tagore, the comedian, claimed that his daughter Sujata was not wearing any sewn clothes during this extreme tension and he announced to everyone that if anyone present could prove that Sujata had sewn Sujata's blouse, he would give her a reward of one lakh rupees.
In the end, no one got this one lakh rupees. Because the girls of the boy's house checked and saw that the blouse of the bride was not sewn. Artist Gaganendranath has made his daughter's blouse or chemise. She has skillfully made Sujata's blouse by attaching her piece of clothing with the help of expensive eighteen. This time Sujata got married with great joy. This wedding dress of the bride wearing the first blouse was housed in the Museum on College Street as a work of art by Gaganendranath Tagore.
From then on, Bengali girls were allowed to get married wearing shirts or blouses.
Comments
Post a Comment