বর্তমানের মানব সমাজ
বর্তমানের মানব সমাজ
বর্তমানে মানব সমাজ ধর্মের দিক হতে একেবারে নাস্তিক, আচারের দিক হতে খুব যুক্তিবাদী কিন্তু বিচারের দিক থেকে ঘোর কুসংস্কারচ্ছন্ন। মানব জড়িবুটি, তাগা-তাবিজ, মাদুলি, ঝাড়ফুঁক, মন্ত্র-পড়া, তেল-পড়া, জল-পড়া, নুন-পড়া ইত্যাদি নানা কুসংস্কারে আবদ্ধ। আধুনিক শিক্ষাতে শিক্ষিত হয়ে মানব নানা গর্ববোধ করে, কিন্তু নানা রকম কুসংস্কারের শিকড় তার মনের মধ্যে গেড়ে আছে। সুতরাং শিক্ষিত মানবগণও ঐ কুসংস্কার হতে মুক্ত নয়। এরা নিজের অজান্তে বা খেয়ালের আবেগে, ভয়ের তাড়নায় ও লোভের বশবর্তী হয়ে অনেক কুসংস্কার স্বীকার করছে এবং তা আচরণেও কার্যকর করবার প্রয়াস করছে। কী বিভ্রান্তি! কী মেকী শিক্ষার গর্ববোধ! মানবের যতদিন না অধ্যাত্ম চেতনার উন্মেষ হচ্ছে, ততদিন মানবসমাজ কুসংস্কার ও ভ্রান্তি হতে মুক্ত হবে না। তাই যথার্থ বিচার করো, বিবেকী হও।
ধর্ম বলতে যা বুঝায়, তা হল—যা সমস্তকে ধারণ করে বা ধরে রাখে এবং যাকে অবলম্বন করে সমষ্টিগতভাবে বাঁচা যায়। কারণ জীবনের কলা হল বাঁচার তাগিদ ও পূর্ণতা লাভের প্রবণতা বা প্রচেষ্টা। সুতরাং ধর্মকে আশ্রয় করেই সমষ্টিগতভাবে বাঁচা যায় এবং পূর্ণতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়।
নতুবা বাঁচার উদ্দেশ্যই বৃথা হয়ে দাঁড়ায় মানবের নিকট। মানব বাঁচতে চায় এবং তার জন্য প্রয়োজন হয়—আহার, আচ্ছাদন ও আশ্রয়। জীবন ধারণ করতে গেলে এগুলোর একান্ত প্রয়োজন এবং সুন্দরভাবে বাঁচতে গেলে আরও তিনটি জিনিসের প্রয়োজন হয়, যথা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা। কিন্তু এই জীবন ধারণ কিসের জন্য বা এর উদ্দেশ্য কি? নিশ্চয় জীবন ধারণের উদ্দেশ্য আছে এবং এর প্রয়োজনও আছে। কি সেই উদ্দেশ্য এবং কি সেই প্রয়োজন? উত্তরে বলতে হয়—উদ্দেশ্য হল পরম সত্য বা আত্মতত্ত্বের উপলব্ধি আর এর জন্যই জীবন ধারণের প্রয়োজন। সুতরাং আত্মোপলব্ধি ও আনন্দলাভই হল জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য।
যখন মানবের জীবনধারা সমষ্টির অনুকূল হয়ে প্রভাবিত হয় তখনই সে ধার্মিক, কারণ সে সহজ সৃজনাত্মক পথেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু মানবের জীবনধারা যখন সমষ্টির প্রতিকূল হয়ে চালিত হয় তখন সে অধার্মিক বা অসহজ। কারণ সে অধর্ম বা অসহজ। কারণ সে অধর্ম বা অসহজ ধ্বংসাত্মক পথে অগ্রসর হচ্ছে। সুতরাং সমষ্টির অনুকূল হয়ে বাঁচ এবং বাঁচার লক্ষ্যে বা জীবন-ধারণের উদ্দেশ্যে উপনীত হও।
ধর্মের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য হল মহান। কিন্তু অধিকাংশ ধর্মগুরু বা ধর্মের মাস্টারমশাইরা ধর্মের নাম নিয়ে কি করছে! সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা বা ভ্রান্তিকে আশ্রয় করে তারা করছে ষড়যন্ত্র এবং ধর্মীয় অনুশাসনের নামে ধর্মীয় শোষণ। যদি মানবের বিবেক বৃত্তি জাগ্রত হয় এবং তাদের ষড়যন্ত্র ধরে ফেলে, তাই তারা প্রচার করছে—‘‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।’’ কারণ যুক্তি বা তর্কে তাদের চালাকি ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে, এই জন্য কৌশলে তারা সাধারণ মানুষের চিন্তাকে পঙ্গু করতে লেগেছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস আনার জন্য আধ্যাত্মিকতার নাম নিয়ে তারা নানা কুসংস্কার ও বিচার বিহীন আচার তৈরী করছে এবং নানা ভেলকিও ধারণ করছে। মানব যখন বিপদগ্রস্ত হয় এবং অসহায় বোধ করে তখনই সে ঐ ব্যক্তিগণের ফাঁদে পা দেয় আর শোষণ ও অপকর্মের শিকারে পরিণত হয়। আবার অত্যধিক লোভাতুর তথাকথিত শিক্ষিত অসহজ কিছু মানবও তাদের খপ্পরে নাজেহাল ও নাস্তানাবুদ হয়। সুতরাং এটা নিশ্চিত যে, যতক্ষণ মানব অসহজ অবস্থায় থাকে ততক্ষণ ওদের খপ্পরে পড়ে থাকে, কিন্তু সহজ মানব বা অধ্যাত্মচেতনা সম্পন্ন মানব ওদের ফাঁদে পড়ে না। আর পড়লেও তা বেশীক্ষণ স্থায়ী হয় না।
মানবকে সহজ হতে হবে, অধ্যাত্মচেতনার বোধে উদ্বুদ্ধ হতে হবে, তবেই ঐ সমস্ত ভেলকি বা অজ্ঞান কুসংস্কার দূর হবে, নতুবা ওগুলি দূর হওয়া বড়ই দুরূহ। এইজন্য দেখা যায় অধ্যাত্ম চেতনার বোধ বিহীন সাধারণ মানব আজও প্রতারিত হচ্ছে ঐ সমস্ত স্বার্থান্বেষীদের ষড়যন্ত্রে। সুতরাং সচেতন হও, বিবেক বশতঃ এগিয়ে চলো। এটা কি মানবের সভ্যতা? কি লজ্জা! আধাত্মিক অজ্ঞতার শিকারগ্রস্ত সাধারণ মানব কামনা সফলতার ভুয়ো আশ্বাসে অবাধে শোষিত ও ভ্রষ্টাচারে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। অধ্যাত্মচেতনার উন্মেষ ব্যতিরেকে এই কুচক্রের ব্যুহ ভেদ করা সম্ভব নয়।
Translate in English
Today's human society
At present human society is absolutely atheistic in terms of religion, very rational in terms of conduct but very superstitious in terms of justice. Human herbs, amulets, amulets, witchcraft, mantra-reading, oil-reading, water-reading, salt-reading etc. are bound by various superstitions. Man is proud of being educated in modern education, but the roots of various superstitions are ingrained in his mind.
So even educated human beings are not free from that superstition. Unbeknownst to them, they are accepting many superstitions out of fear and greed and are trying to put them into practice. What a mess! What a pride of fake education! Human society will not be free from prejudice and delusion as long as the spiritual consciousness of man is not being developed. So judge fairly, be conscientious.
What is meant by religion is that which contains or retains all and by which all can be saved collectively. Because the art of life is the urge to live and the tendency or effort to attain perfection. Thus, by resorting to religion, one can survive collectively and the path to perfection is widened.
Otherwise the purpose of survival becomes useless to man. Humans want to live and need food আ food, shelter, and shelter. They are essential for sustaining life and for living well, three more things are needed, namely health, education and protection.
But what is the purpose of this life? Surely there is a purpose to life and there is a need for it. What is that purpose and what is that need? The answer is that the purpose is the realization of the absolute truth or self, and for this it is necessary to hold life. So self-realization and enjoyment is the goal or purpose of life.
Man is righteous only when his way of life is influenced by the collective, because he is advancing in an easy creative way. But when the human way of life is run against the totality, it is ungodly or uncomfortable. Because he is unrighteous or uncomfortable. Because he is moving in an unrighteous or uncomfortable destructive way. So live in harmony with the collective and reach the goal of survival or the purpose of life-sustaining.
The purpose of religion is great. But what are most religious leaders or masters of religion doing in the name of religion! By resorting to the ignorance or delusion of the common people, they are carrying out religious exploitation in the name of conspiracy and religious discipline. If the human conscience is awakened and their conspiracies are caught, then they are preaching - "The object of faith is far from argument." Because their cunning is likely to be caught in logic or argument, this is why they are tactfully crippling the thinking of the common man. In the name of spirituality, they are creating various superstitions and unjust practices to bring faith to the common people and they are also holding various magic tricks. Only when a human being is in danger and feels helpless does he fall into the trap of those people and become a victim of exploitation and misdeeds. Again, the so-called educated and uncomfortable human beings who are too greedy also fall into their clutches and become disgusted and humiliated. So it is certain that as long as human beings are uncomfortable, they fall into their clutches, but simple human beings or human beings with spiritual consciousness do not fall into their trap. And even if it falls, it does not last long.
Man has to be simple, he has to be inspired with a sense of spirituality, then all those magic or ignorant superstitions will be removed, otherwise it will be very difficult to get rid of them. For this reason, it can be seen that the common man without a sense of spiritual consciousness is still being deceived by the conspiracies of all those selfish people. So be aware, move forward with conscience. Is it human civilization? What a shame! Ordinary human beings, victims of spiritual ignorance, are being exploited and corrupted under the false promise of success. It is not possible to break this vicious circle without the emergence of spiritual consciousness.
Comments
Post a Comment